দিশা ওর বান্ধবীর কাছে সব কিছু শুনে আরো চিত্কার করে কান্না সুরু করে দিয়ে বলে……
রাতের খাবারের সময় আম্মাকে খুঁজতে খুঁজতে রান্নাঘরে হাজির হলাম। বড় মামি রান্নাঘরে কাজ করছিলেন। আমাকে ডেকে হাতে একটা বাটি ধরিয়ে দিয়ে বললেন,”যা তো মা,এই বাটিটা ওখানে তোর মামারা যেখানে খেতে বসেছে দিয়ে আয়। মুরাদ আবার মাছ খায় না সেজন্য ওর জন্য একটু ডিম ভুনা করেছি ,দিয়ে আয়।”
এদিকে দিশা তখন সেখানে বসে বসে শুধু নিরবেই কান্না করে যাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ যখন সে মাথা তুলে রক্তিমের চলে যাওয়ার দিকে তাকালো’তখনি দেখলো যে রক্তিমের মুখ দিয়ে রক্ত সমানে গড়িয়ে পরছে এবং ওর সারা শার্টে রক্তে ভিজে গেছে। তারপর হঠাৎ দেখে রক্তিম রাস্তায় ধুপ করে পরে গেলো। তা দেখে দিশা সাথে সাথে রক্তিম বলে চিত্কার দিয়ে ওর কাছে দৌড়ে চলে যেতে লাগলো।
(দিশা রক্তিমের কথা শুনে আরো জোড়ে কান্না শুরু করে দিলো)
কিন্তু দেখা আর হল কই ‘সখীর সনে’ স্কুল গিয়ে শুনি, ছুটি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলাম, সকালে সমীরের সাথে দেখা হবে, ভেবে যতটা আনন্দ হচ্ছিল, এবার ঠিক ততটাই নিরাশ হয়ে গেছি।
আবার…..! ওই নামে ডাকতে বারণ করেছি না তোমায় তাও ওই নামেই ডাকবে বলো?
সকালে খাওয়ার সময় আমার ভাই ইফতি বলল, “তোমরা জানো ? কালকে আমাদের স্কুলের মাঠে বিবাহিত এবং অবিবাহিতদের ভিতর ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।”বিবাহিতদের ক্যাপ্টেন হচ্ছে বড় মামা আর অবিবাহিতদের ক্যাপ্টেন হচ্ছে মুরাদ ভাই। এবং খেলার পরে বিশাল খাবার-দাবারের আয়োজন করা হয়েছে। সেই উপলক্ষে কয়েকটা খাসি কেনা হয়েছে।”
“খেলতে খেলতে ঝগড়া আবার খেলতে খেলতেই বন্ধুত্ব, স্কুল জীবনের সেই দিন গুলো আজও খুব মনে পড়ে।”
এরপর বাচ্চা মামা গাইল ,”আমি যে কে তোমার তুমি তা বুঝে নাও……”
ঘুরে দাঁড়ানো ছোট গল্প — মোহাম্মদ নুরুল আজিম চয়ন
! জানিস!! না তুই তা জানিস না ‘আর জানলে এমন ভাবে বলতে পারতি না। আরে ওই ছেলেটা তোর জন্য যা করেছে ‘সেটা পৃথিবীরকেউ তোর জন্য করবে না। আর তুই সেই ছেলেটাকেই আজকে সবার সামনে অপমান করলি। ছিঃ দিশা ছিঃ।
ক্লাস এইটে উঠার পরে এক দুর্ঘটনায় ছেলেটি মাথায় আঘাত পায়। এতে তার দু’চোখে আঘাতের প্রভাব পড়ে। স্বাভাবিক ভাবে সবকিছু দেখতে পারেনা। তখন তার সুন্দর আনন্দোময় জীবন ব্যাহত হয়। মেয়েটি এখন আর ছেলেটিকে আগের মতো ভালোবাসে না। ৯ম শ্রেণীতে উঠার পর হঠাৎ একদিন স্কুলে খেলা ধুলার অনুষ্ঠানের দিন ছেলেটি স্কুলের বারান্দায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আশপাশের ছাত্র-ছাত্রী এ অবস্থা দেখে ছেলেটির কাছে ছুটে আসে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলে ছেলেটির মৃত্যু হয়। কিন্তু ছেলেটি মারা যাওয়ার এক বছর পরের ভ্যালেন্টাইন্স ডে তেও মেয়েটি একি ভাবে চিঠি সহ গোলাপের তোড়া পেল। চিঠিতে লেখা ছিল“আমি গত বছরের এই দিনে তোমাকে যতটুকু ভালবাসতাম, এখন তার থেকে আরও বেশি ভালবাসি। প্রতিটি বছর পার হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে তোমার more info জন্যে আমার এই ভালোবাসা আরো শতগুণ বাড়বে”।
রক্তিম বাসায় এসে ভাবে যে করেই হোক ওর দিশার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। কারণ ওর জন্যই দিশা আজকে হাসপাতালে। তাই দিশা যখন সুস্থ হয়ে যায় এবং আবার কলেজ যাওয়া শুরু করে তখন সেও নিজের কলেজ থেকে টি.
সে নানীর পাশ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “ঠিক আছে । আমি হাত মুখ ধুয়ে কিছু খেয়ে নিচ্ছি আর ততক্ষণ আপনি বিশ্রাম নেন আবার এসে আমি দেখে যাব”। সে দরজার কাছে এগিয়ে গিয়ে ঠিক বাইরে বের হওয়ার আগ মুহূর্তে ঘাড় বেঁকিয়ে আরেকবার তার সেই তীব্র দৃষ্টিতে আমাকে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়ে বেরিয়ে গেল।